লোড হচ্ছে...

সর্বশেষ

অনলাইন শিক্ষা কি? অনলাইন শিক্ষা অর্জনের উপায়। অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জ।

Details of Online Shikkha

আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে অনলাইন শিক্ষা কি? অনলাইন শিক্ষা কিভাবে অর্জন করা যায়? অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জসমূহ।

অনলাইন শিক্ষা

অনলাইন শিক্ষা বলতে বোঝায় তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস (মোবাইল, কম্পিউটার, ট্যাব, ল্যাপটপ ইত্যাদি) ব্যবহার করার মাধ্যমে ঘরে বসে বা পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে থেকে যে কোন বিষয়ে স্বল্প সময়ে সহজে জ্ঞান অর্জন করা।

অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব

বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব যে কত কোভিড- ১৯ মহামারীতে পুরো বিশ্ব বুঝতে পেরেছে। ২০২০ সালে যখন পুরো বিশ্ব মহামারীতে আক্রান্ত তখন বিশ্বের সকল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ে। অনলাইনে ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষা নেওয়া ও ফলাফল প্রকাশ করা হয়। 
১. অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে অল্প সময়ে জ্ঞান অর্জন করা যায়। 
২. অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সহজে শিক্ষা করা যায়।
৩. অনলাইনে শিখলে ঘরে বসে ক্লাস করা সম্ভব।
৪.  কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে অনর্থক অর্থ ব্যয় করতে হয় না। 
৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বশরীরে উপস্থিত না থেকে শিক্ষা অর্জন করা যায়। 
৬. অনলাইনে শিক্ষার ব্যবস্থা থাকলে দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষা লাভ করা যায়। 
৭. বিশ্বের যে কোন দেশ থেকে শিক্ষা অর্জন করা যায়। 
৮. একসাথে একাধিক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হয়। 
৯. পেশাগত দক্ষতা, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিষয়ে অনলাইনে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব।
১০. অনলাইনে শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন শিক্ষক একসাথে অনেক শিক্ষার্থীকে শেখাতে পারে। 

কিভাবে অনলাইন থেকে শিক্ষা অর্জন করা যায়?

১. Youtube থেকে প্রয়োজনীয় ভিডিও গুলো দেখে।
2. Facebook, Website থেকে বিভিন্ন আর্টিকেল পড়ে। 
৩. কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক জুম মিটিং-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে পারেন।
৪. whatsapp, Messenger অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিও ক্লাস নিতে পারেন। 
৫. google Classroom ব্যবহার করে একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারেন। 
৬. একজন শিক্ষক ফেসবুক বা ইউটিউবে লাইভ ক্লাস করিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারেন।

অনলাইন শিক্ষা অর্জনের চ্যালেঞ্জসমূহ

১. অনলাইন শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস দরকার। অনেক শিক্ষার্থীর ভালো মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কেনার সামর্থ্য থাকে না।

২. অনলাইন শিক্ষা অর্জন করার ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ থাকা দরকার। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ইন্টারনেট সংযোগ বা ওয়াইফাই সংযোগ কম থাকে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে সিমগুলোর নেটওয়ার্ক দুর্বল থাকায় এমবি কেনার পর ও নেট সংযোগ ঠিকমতো পায় না।

৩. ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলোর ব্যবহার সম্পর্কে দক্ষ হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেশিরভাগ মানুষ তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান এর অভাবে ঠিকমতো অনলাইন শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থ হয়। 

৪. অনলাইন ক্লাস করার জন্য যে অ্যাপগুলি রয়েছে, সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে ভালো জ্ঞান দেখা। জুম মিটিং, whatsapp, google Classroom , ইত্যাদি অ্যাপ গুলোর সঠিক ব্যবহার করতে জানা। 

৫. দারিদ্রতার কারণে উন্নয়নশীল দেশের অনেক ব্যক্তি ইচ্ছা থাকা শর্তেও সঠিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস কিনতে ও ব্যবহার করতে শিখতে পারে না। 

৬. নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে শিক্ষার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের নেতিবাচক প্রভাব থাকায় অনলাইন শিক্ষা অর্জন করা খুব চ্যালেঞ্জিং। অভিভাবকরা ভেবে থাকে যে, তার সন্তান মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে জ্ঞান অর্জন না করে  অধঃপতনে যেতে পারে। অভিভাবকদের এই ধরনের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। লেখাপড়া সাধারণ কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটবে বলে অধিকাংশ পিতা মাতায় তার সন্তানকে মোবাইল স্পর্শ করতে দেয় না। এতে করে আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা পাঠ্য পুস্তকের বাইরের জ্ঞান গুলো অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে।

৭. বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট বা প্লাটফর্ম থেকে সঠিক  তথ্য পেয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারার জন্য পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা দরকার।

৮. সকল শিক্ষার্থীর শেখার সামর্থ্য সমান নয়। সবার শেখার উপায়ও গতি একরকম না। অনলাইন শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর দুর্বলতাগুলো শিক্ষক সঠিকভাবে সনাক্ত করতে পারে না। তাই অনলাইনে শিক্ষা অর্জন করার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। 

৯. অনলাইনে শিক্ষা অর্জন করলে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞানের ঘাটতি থেকে যায়। হাতে-কলমে শিক্ষার্থী কাজ করে তার দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে পারেনা। ফলে, শিক্ষা অর্জনের মূল উদ্দেশ্য বাধাগ্রস্ত হয়। 


উপরের আলোচনা থেকে বলা যায় যে, অনলাইনে শিক্ষা অর্জন করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অনলাইনে অনেক কিছু সহজে দ্রুত সময়ে শিখতে পারলেও কিছু কিছু বিষয়ে সঠিকভাবে জ্ঞান অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অনলাইনে শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি স্ব শরীরে ব্যবহারিক কাজ বা হাতে-কলমে শেখার ও প্রয়োজন রয়েছে। মোটের উপর, কোভিড- ১৯ এর মতো মহামারী বা দূর দুরান্ত থেকে বা শারীরিক অসুস্থতায় একান্ত অনন্যোপায় হয়ে অনলাইনে শিক্ষা অর্জন করা অনেক উপকারী। আমরা অবসর সময়কে অযথা নষ্ট না করে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে অনলাইন শিক্ষা অর্জন করে নিজের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে পারি।

Post a Comment

Previous Post Next Post