লোড হচ্ছে...

সর্বশেষ

এক নজরে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন–উত্তর

📘 ভূমিকা

বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও বিশ্বসাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি শুধু কবি নন, ছিলেন ঔপন্যাসিক, সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার, শিক্ষাবিদ, চিত্রশিল্পী ও দার্শনিক। বিসিএস লিখিত, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি, শিক্ষক নিবন্ধনসহ সকল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় তাঁর জীবন, কর্ম ও সাহিত্য সম্পর্কে প্রশ্ন আসা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তাই এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন–উত্তর, টেবিল, তথ্যবক্স ও কার্ড ডিজাইনসহ একটি পূর্ণাঙ্গ দীর্ঘ নোট তৈরি করা হলো।

📚 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর

❓ ১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোথায় ও কবে জন্মগ্রহণ করেন?

➡️ তিনি ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

❓ ২. তাঁর পিতামাতা কে ছিলেন?

➡️ পিতা: দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ➡️ মাতা: সারদাসুন্দরী দেবী

❓ ৩. কোন গ্রন্থের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?

➡️ ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি (ইংরেজি অনুবাদ) গ্রন্থের জন্য।

❓ ৪. রবীন্দ্রনাথ কোন দুটি দেশের জাতীয় সংগীত রচনা করেছেন?

➡️ বাংলাদেশ – “আমার সোনার বাংলা” ➡️ ভারত – “জন গণ মন”

❓ ৫. তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম কী?

➡️ শান্তিনিকেতন (পরে বিশ্বভারতীতে রূপান্তরিত)।

❓ ৬. রবীন্দ্রনাথের উল্লেখযোগ্য উপন্যাস কোনগুলো?

➡️ গোরা, ঘরে-বাইরে, যোগাযোগ, নৌকাডুবি, দুই বোন, চোখের বালি।

❓ ৭. তাঁর বিখ্যাত গল্পসমূহ কী?

➡️ কাবুলিওয়ালা, পোস্টমাস্টার, সাম্প্রদায়িকতা, ছুটি, হো-জো- বো- রো- লো প্রভৃতি।

❓ ৮. তাঁর কোন কোন নাটক জনপ্রিয়?

➡️ ডাকঘর, রক্তকরবী, অচলায়তন, রাজা, চণ্ডালিকা, বিসর্জন।

❓ ৯. রবীন্দ্রনাথকে কেন "বিশ্বকবি" বলা হয়?

➡️ তাঁর সাহিত্যকর্ম বিশ্বের বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং তিনি প্রথম এশীয় নোবেলজয়ী সাহিত্যিক—এ সকল কারণেই তাঁকে “বিশ্বকবি” বলা হয়।

❓ ১০. তাঁর মৃত্যুর তারিখ কত?

➡️ ৭ আগস্ট ১৯৪১।

📊 রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

বিষয় তথ্য
জন্ম ৭ মে ১৮৬১, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি
নোবেল জয় ১৯১৩ – গীতাঞ্জলি
জাতীয় সংগীত বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা
প্রধান সাহিত্যধারা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, গান
প্রতিষ্ঠা শান্তিনিকেতন (বিশ্বভারতী)
মৃত্যু ৭ আগস্ট ১৯৪১

📖 বিস্তারিত নোট (বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বাঙালির আত্মার কবি, মানবতাবাদী চিন্তাবিদ ও বিশ্বমানবতার পথিকৃৎ। তাঁর সাহিত্যকর্মে প্রকৃতি, প্রেম, মানবতা, সমাজচেতনা, দেশপ্রেম ও দার্শনিক ভাবনার অপরূপ সমন্বয় দেখা যায়। তিনি বাংলা গানের জগতে "রবীন্দ্রসঙ্গীত" নামে একটি স্বতন্ত্র ধারার সূচনা করেন, যা বাঙালি জীবনের আবেগ, প্রেম ও আধ্যাত্মিকতার সর্বোচ্চ প্রকাশ।

তাঁর গল্পসমূহে মানুষের মনের গভীরতম অনুভূতি, সমাজব্যবস্থার অসাম্য, নারীর অবস্থান ও মানবিক সম্পর্কের সূক্ষ্ম দিকগুলো ফুটে ওঠে। গল্পগুচ্ছ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা গল্পসংকলন, যেখানে “কাবুলিওয়ালা”, “পোস্টমাস্টার”, “সমাপ্তি”, “ছুটি” প্রভৃতি অমর গল্প স্থান পেয়েছে।

উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ সমাজ, রাজনীতি, নারীর স্বাধীনতা, ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ও পাশ্চাত্য প্রভাব তুলে ধরেছেন। ঘরে-বাইরে উপন্যাসে স্বদেশী আন্দোলন, ধর্মীয় বিভাজন ও নারীর স্বাতন্ত্র্য সমস্যাকে গভীরভাবে চিত্রিত করা হয়েছে।

নাটকে তিনি প্রতীকবাদ, মানবতাবাদ ও সমাজ সমালোচনার অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। রক্তকরবী তাঁর নাট্যশিল্পের সর্বোচ্চ সাফল্য হিসেবে বিবেচিত।

শিক্ষাবিদ হিসেবে রবীন্দ্রনাথ "শান্তিনিকেতন" প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে প্রকৃতি ও মানুষের সমন্বয়ে উদার মানবতাবাদী শিক্ষাদর্শ গড়ে ওঠে। তিনি বিশ্বাস করতেন— শিক্ষা হবে মুক্ত, সৃজনশীল ও বাস্তবভিত্তিক; মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য।

১৯১৩ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন, যা এশিয়ার প্রথম নোবেল জয়। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বসাহিত্যে অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত হন।

মৃত্যুর পরও তাঁর সাহিত্য, সঙ্গীত, দর্শন ও মানবতাবাদী চেতনা আজো সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। বাঙালির জাতিসত্তা ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তাঁকে কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post