লোড হচ্ছে...

সর্বশেষ

আয়কর কি? অনলাইনে ই -রিটার্ন দাখিল এর সুবিধা, যাদের জন্য ই- রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক ও রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়া।

ইনকাম ট্যাক্স/আয়কর

বেতন অথবা আর্থিক সম্পদ যেমন ব্যাংক একাউন্ট, ডিপিএস, সঞ্চয় পত্র ইত্যাদি থেকে আয় থাকলে সেই আয়ের উপর সরকারকে নির্দিষ্ট হারে প্রতিবছর কর দিতে হয়, এই করকে ইনকাম ট্যাক্স বলে।

প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়সীমা অর্থাৎ নভেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট না করলে, আর আয়কর রিটার্নে কোন ভুল তথ্য দিলে বা শুন্য আয়কর দিলে জরিমানা ও জেল হওয়ার বিধান রয়েছে।
আরও দেখুন — পিল বাটন উদাহরণ

অনলাইন e-Return এ আয়কর বিবরণ জমা প্রদানের সুবিধা: 

 e-Return মাধ্যমে করদাতারা নিম্নলিখিত সুবিধা পান— 

 i) ঘরে বসে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা যায়। আয়কর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।

 ii) TIN সার্টিফিকেট অনলাইনে প্রিন্ট/ডাউনলোড করা যায়।

 iii) রিটার্ন ও ট্যাক্স সার্টিফিকেট অনলাইনে প্রিন্ট/ডাউনলোড করা যায়।

 iv) রিটার্ন জমা দেওয়ার পর Acknowledgement Slip ডাউনলোড করা যায়।

 v) রিটার্ন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় চালান অনলাইনে ডাউনলোড ও প্রিন্ট করা যায়। 

 vi) এই মাধ্যমের মাধ্যমে পূর্ববর্তী বছরের রিটার্ন দাখিল করা থাকলে তার রেকর্ড প্রিন্ট ও সুবিধা পাওয়া যায়।

অনলাইন e-Return দাখিল যাদের জন্য বাধ্যতামূলক 

 ২০২৪–২০২৫ কর বছরের জন্য অনলাইন রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক—

 ক) ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অধিবাসী সব করদাতা; 

খ) সব বাণিজ্যিক ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী; 

গ) সব মোবাইল অপারেটরের সিম বিক্রেতা; 

ঘ) ইউনিভার্সাল বাংলাদেশ মিলিটারী, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, জাপান টোবাকো বাংলাদেশ, এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশ, ডাটা-সফট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড, ও রেনাটা বাংলাদেশ পিএলসি-এর কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ।

অনলাইনে রিটার্ন জমা দেবার প্রক্রিয়া:

রিটার্ন জমা দেওয়ার ৭টি ধাপ রয়েছে, সেগুলি নিচে দেয়া হল-

i) Assessment - প্রথমে আপনাকে কিছু মৌলিক তথ্য দিতে হবে

ক। Assessment information: Assessment year, Income year ইত্যাদি।

খ। Heads of income- চাকরি হতে আয়, সম্পত্তি ভাড়া হতে আয়, কৃষি আয়, ব্যবসা আয়, মূলধনী লাভ, আর্থিক পরিসম্পদ হতে আয়, অন্যান্য উৎসের আয়। এই খাতসমূহের মধ্যে প্রযোজ্যটি সিলেক্ট করতে হবে।

গ। Additional information- আয়ের প্রধান উৎসের অবস্থান এবং অন্যান্য আয়।

ঘ। IT-10B requirements সম্পদ সম্পর্কিত তথ্য যেমন সম্পদের পরিমাণ, মোটর গাড়ি ইত্যাদি।

ii) Income – এই পেজে খাতভিত্তিক আয়ের সমস্ত তথ্য দিন, যেমন- চাকরি হতে আয়, ভাড়া হতে আয়, কৃষি হতে আয়, ব্যাবসা হতে আয়, মূলধনি হতে আয়, আর্থিক পরিসম্পদ হতে আয় এবং অন্যান্য উৎস হতে আয়।

iii) Rebate- রেয়াতযোগ্য বিনিয়োগ যেমন জীবন বিমা, ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, জিপিএফ ইত্যাদির তথ্য উল্লেখ করুন।

iv) Expenditure- আপনার বাৎসরিক ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করুন।

v) Asset & liabilities- সম্পদ এবং দায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। যেমন: ব্যবসার মূলধন, অ-কৃষি সম্পত্তি, কৃষি সম্পত্তি, আর্থিক সম্পদ (শেয়ার, ডিবেঞ্চার, সেভিংস সার্টিফিকেট, এফডিআর, ডিপিএস), মোটর গাড়ি, সোনা, হীরা, গৃহস্থালীর জিনিসপত্র, নগদ ইত্যাদি। এছাড়া ঋণের তথ্যও প্রদান করুন।

vi) Tax & payment- এই সেকশনে সিস্টেম আপনাকে আপনার মোট আয়ের বিবরণ, ট্যাক্স কম্পিউটেশনের বিবরণ, প্রদেয় করের পরিমাণ দেখাবে। এই সেকশন থেকে আপনি ইতোমধ্যে উৎসে কর্তিত কর, অগ্রিম প্রদত্ত কর, পূর্ববর্তী বছরে পরিশোধিত অতিরিক্ত কর এবং রিটার্নের সাথে পরিশোধিত করের তথ্য প্রদান করে আপনার কর পরিশোধের তথ্য আপডেট করতে পারবেন। এরপর অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এই সেকশন হতে আপনি আপনার জন্য প্রযোজ্য প্রদেয় কর মোবাইল ব্যাংকিং যেমন- বিকাশ, রকেট, নগদ ইত্যাদি বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন।

vii) Return view- এখানে সম্পূর্ণ রিটার্ন দেখাবে, আপনি ভুল কোন তথ্য এন্ট্রি দিয়েছেন কিনা তা পরীক্ষা করতে পারবেন, সেভ করে রাখতে পারবেন এবং সবশেষে সাবমিট করতে পারবেন। অনলাইন রিটার্ন পূরণে আপনি চাইলে সব তথ্য একেবারে ইনপুট দিয়ে রিটার্ন দাখিল করতে পারেন আবার প্রয়োজনে সময়ে সময়ে তথ্য ইনপুট দিয়ে সেভ রাখতে পারবেন এবং সময় নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সাবমিট করতে পারবেন। সাবমিট করা হলে যেকোনো সময়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, রিটার্ন, সার্টিফিকেট, চালান ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারবেন।

অনলাইনে সম্পূর্ণ রিটার্ন দাখিলের ভিডিও দেখুন:






আয়কর সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)
১) ইনকাম ট্যাক্স বা আয়কর কী?
আয়কর হচ্ছে ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানগত আয় থেকে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত একটি বাধ্যতামূলক কর। যেমন— বেতন, ব্যবসা-আয়, বাড়িভাড়া, কমিশন, সুদ, ডিভিডেন্ড ইত্যাদি উৎস থেকে অর্জিত আয়ের উপর কর ধার্য করা হয়।
২) কারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে বাধ্যতামূলক?
সাধারণত নিম্নোক্ত ব্যক্তিরা রিটার্ন দাখিলে বাধ্য—
  • যাদের বার্ষিক আয় নির্ধারিত করমুক্ত সীমার বেশি
  • ব্যবসায়ী/পেশাজীবী/ফার্ম মালিক
  • টিআইএন (TIN) বাধ্যতামূলক সকল ক্ষেত্রের ব্যক্তি
  • যারা ব্যাংক লেনদেন, ঋণ, গাড়ি/সম্পত্তি কেনায় কর সনদ প্রয়োজন
৩) রিটার্ন দাখিল না করলে কী সমস্যা হতে পারে?
রিটার্ন দাখিল না করলে—
  • জরিমানা ও অতিরিক্ত কর দিতে হতে পারে
  • ট্যাক্স সার্টিফিকেট না থাকায় ব্যাংক লোন/ভিসায় সমস্যা
  • ভবিষ্যতে সম্পদ দেখাতে অসুবিধা
  • অনেক সরকারি/বেসরকারি কাজে বাধা
৪) অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সুবিধা কী?
  • বাড়িতে বসেই রিটার্ন দাখিল করা যায়
  • ফর্ম স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয় — ভুল কমে
  • রশিদ/ACK নম্বর সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায়
  • কর হিসাব, ছাড়, বিনিয়োগ — সবই অটো ক্যালকুলেশন
  • সময় বাঁচে, দালাল নির্ভরতা কমে
৫) টিআইএন (TIN) নিবন্ধন কীভাবে করবো?
  • আয়কর বোর্ডের অফিসিয়াল পোর্টালে যান (eTIN Registration)
  • NID/Passport তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন
  • মোবাইলে OTP কোড দিয়ে ভেরিফাই করুন
  • TIN সার্টিফিকেট ডাউনলোড করুন
পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে ৫–১০ মিনিটেই সম্পন্ন হয়।
৬) অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের জন্য কোন কোন ডকুমেন্ট লাগে?
  • TIN নম্বর
  • বেতনের স্লিপ / ব্যবসায়িক আয়ের তথ্য
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (প্রয়োজনে)
  • বিনিয়োগের সনদ (LIP, DPS, PF, শিক্ষাবীমা ইত্যাদি)
  • সোর্স ট্যাক্স কাটা হয়েছে এমন চালান/সনদ
৭) অনলাইন রিটার্ন জমা দেওয়ার ধাপগুলো কী?
  • আয়কর পোর্টালে অ্যাকাউন্টে লগইন করুন
  • সঠিক ফর্ম নির্বাচন করে তথ্য পূরণ করুন
  • আয়, বিনিয়োগ, কর-ছাড় সব যুক্ত করুন
  • বকেয়া কর থাকলে অনলাইনে পরিশোধ করুন
  • Submit চেপে ACK রসিদ ডাউনলোড করুন
৮) রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ কখন?
সাধারণত প্রতি বছরের **৩০ নভেম্বর**, তবে সরকার অনেক সময় তা বাড়ায়। অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি দেখে নিশ্চিত হওয়া উচিত।
৯) রিটার্ন জমা দেওয়ার পর ভুল পেলে কি ঠিক করা যায়?
হ্যাঁ, রিটার্ন “সংশোধন রিটার্ন (Revised Return)” হিসেবে জমা দেওয়া যায়। তবে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সংশোধন করতে হয়।
১০) রিফান্ড (Tax Refund) কীভাবে পাবো?
যদি আপনার উৎসে কাটা কর নির্ধারিত করের বেশি হয়, তাহলে রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে রিফান্ড দাবি করতে পারবেন। অনলাইনে রিফান্ড স্ট্যাটাস ট্র্যাক করাও সম্ভব।

Post a Comment

Previous Post Next Post